২.১.৬ তৈরিকৃত খাদ্য ও প্রকারভেদ

এসএসসি(ভোকেশনাল) - পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK
457

২.১.৬ তৈরিকৃত খাদ্য ও প্রকারভেদ: 

তৈরিকৃত খাদ্য ৩ প্রকার 

১. ম্যাশ খাদ্য । 

২. পিলেট খাদ্য। 

৩. ক্রাম্বল খাদ্য ।

(ক) ম্যাশ খাদ্য: 

খাদ্যের সমস্ত উপকরণ গুড়া করে একত্রে মিশানোকে ম্যাশ খাদ্য বলে। হাতে মিশ্রণ করলে প্রথমে পরিমাণে অল্প উপকরণসমূহ একত্রে মিশাতে হবে। ক্রমান্বরে বেশি উপকরণের সাথে একত্র করতে হবে। যন্ত্রের সাহায্যে মিশালে মিশ্রণ সুষম হয়। লিটার পদ্ধতিতে লেয়ার মুরগির জন্য এই খাদ্য বেশি ব্যবহৃত হয়, কারণ এতে মুরগি খাদ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ফলে মুরগির ঠোকরা-ঠুকরী করার সম্ভাবনা কমে। পিলেট খাদ্য দিলে তাড়াতাড়ি খাবার শেষ করে ফেলে, ফলে মুরগি ঠোকরা- ঠুকরী করার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

(খ) পিলেট খাদ্য: 

ম্যান খাদ্যকে লোহার জানিযুক্ত शंকনির মধ্য দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে চাপ প্রয়োগ করলে পিলেট তৈরি হয়। পিলেট খাদ্য ব্যবহার করলে খাদ্যের অপচয় কমে ও মুরগি বেশি পছন্দ করে । এরলারের জন্য এ খাদ্য বেশি ব্যবহার করা হয় ।

(গ) ক্রাম্বল খাদ্য : 

ম্যাশ খাদ্যের অন্য প্রকৃতি ক্রাম্বল খাদ্য। ক্রাম্বল খাদ্যের দানা পিলেট দানার চেয়ে ছোট। এ খাদ্য ব্যবহারে খাদ্যের অপচয় কম হয়। পিলেটের মতই যন্ত্রের সাহায্যে ক্রাম্বল খাদ্য তৈরি করা হয়। স্টার্টার রেশন হিসেবে এ খাদ্য ব্যবহার করা হয়। বাণিজ্যিক ফিড মিলগুলোতে পিলেট খাদ্য ও ক্রামন খাদ্য তৈরি করা হয়। বড় লেয়ার খামারগুলোতে ডিমপাড়া মুরগির জন্য পিলেট খাদ্য এবং বাচ্চার জন্য ক্রামণ খাদ্য ব্যবহার করা হয়।

অনুসন্ধানমূলক কাজঃ

  • তোমার প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি যেকোনো একটি লেয়ার খামার পরিদর্শণ করো । 
  • খামারে ব্যবহৃত খাদ্যের ধরনের উপর মতামত দাও ।

 

                        “পরিদর্শণ ছক”

 

লেয়ার মুরগির খাদ্য সরবরাহ: 

লেয়ার মুরগির খাদ্য সরবরাহ করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়, সরবরাহের পরিমাণ, বয়স অনুযায়ী ওজন, মুরগির জাত ও রং ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করতে হয়, যা নিচে বর্ণনা করা হলো-

(ক) নির্দিষ্ট সময়ে খাদ্য প্রদান:

  • লেয়ার মুরগিকে সুনির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী প্রতিদিন একই সময়ে খাদ্য প্রদান করতে হবে। 
  • দিনের খাদ্যকে ২ বা ৩ ভাগে ভাগ করে সকাল - বিকাল বা সকাল - দুপুর - বিকালে দেওয়া যায় ।
  • তবে বর্তমানে ডিমপাড়া মুরগিকে ৪-৫ বার খাদ্য দেয়া যায় । 
  • খাদ্য দেওয়ার সময় পাত্রের অর্ধেক বা এক-তৃতীয়াংশ খালি রাখতে হয় ।
  • পাত্র পূর্ণ করে দিলে মুরগি ঠোঁট দ্বারা খাদ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে অপচয় করে । 
  • মাঝে মাঝে নির্দিষ্ট সময় পর পর পাত্রের খাদ্য নাড়াচাড়া করে দিলে খাদ্যের স্বাদ বৃদ্ধি পায় এবং মুরগি আগ্রহ নিয়ে খায় ।

(খ) বয়স ও ওজন অনুযায়ী খাদ্য প্রদান:

  • ১০ বা ১৫ সপ্তাহের পুলেট ২০ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। 
  • বয়স ও ওজন অনুসারে ২০ সপ্তাহ বয়স পর্যন্ত পরিমিত খাদ্য প্রদান করতে হয়।
  • প্রতি সপ্তাহে পুলেটের ওজন গ্রহণ করতে হয়। 
  • নির্দিষ্ট বয়সে নির্ধারিত ওজন না হলে খাদ্যের পরিমাণ বা খাদ্যে আমিষের পরিমাণ বাড়াতে হয় ।
  • ওজন বেশি হলে খাদ্য সরবরাহ বা খাদ্যে আমিষের পরিমাণ কমিয়ে ওজন কমাতে হয়। 
  • ডিম পাড়ার পূর্বে বা ডিম পাড়া শুরু করলে আনুপাতিক হারে ওজন বেশি থাকলে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করে ওজন কমানো যাবে না। এতে মুরগি দ্রুত অসুস্থ হয়ে মারা যেতে পারে ।
  • প্রথম ডিম উৎপাদন শুরু হলে স্বাধীনভাবে খেতে দিতে হয়।

(গ) জাত ও বর্ণ অনুসারে খাদ্য প্রদান:

  • জাত ও বর্ণ অনুসারে হালকা জাতের মুরগি ভারী জাতের মুরগির তুলনায় কম খাদ্য খায়। 
  • সাদা হালকা জাতের মুরগি রঙিন ভারী জাতের মুরগির তুলনায় কম খাদ্য খায় ৷

(ঘ) জাত ও স্ট্রেইন অনুসারে খাদ্য প্রদান:

  • জাত ও স্ট্রেইন অনুসারে খাদ্যে অ্যামাইনো অ্যাসিডের পরিমাণ পরিবর্তন করা হয় ।

(ঙ) খাদ্য সরবরাহের জন্য খাবার পাত্রে মুরগির জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা:

 

বাণিজ্যিক লেয়ারের গড় খাদ্য গ্রহণ (হালকা জাতের ক্ষেত্রে):

জন্ম হতে ৭২ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতিটি লেয়ার এর ক্রমপুঞ্জিত খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ ৪৮ কেজি ও পানি গ্রহণ ১০০-১৩৫ লিটার। ডিম উৎপাদনকালীন সময় প্রতিটি মুরগি গড়ে দৈনিক ১১০-১২০ গ্রাম খাবার ও ৩০০- ৫০০ মিলি. পানি খেয়ে থাকে।

 

 

 

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।